প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নগুলো আরো অনেক গবেষণা করে করা উচিৎ

দিব্যেন্দু দ্বীপ
Published : 11 Jan 2016, 10:03 AM
Updated : 11 Jan 2016, 10:03 AM

"শেষের কবিতা" কে লিখেছেন -তা জানার প্রয়োজন রয়েছে, তবে এ প্রয়োজনটা খুব সামান্য প্রয়োজন হয়  বইটা কেনার সময়। সেক্ষেত্রে কে লিখেছে, তা না জানলেও হয়। দোকানে গিয়ে যদি বলা হয় একটা "শেষের কবিতা" দেন, তাহলে লাইব্রেরিয়ান বইটা থাকলে আপনাকে দেবে। শুধু এটা আপনাকে জানতে হবে যে, বই কিনতে বইয়ের দোকানে যেতে হয় মুদির দোকানে গেলে হয় না।

বইটা কেনার সাথে সাথেই দেখতে পাবেন- উপরে লেখকের নাম লেখা আছে। এখন আপনি মনে করতে পারেন, এই রবীন্দ্রনাথ হচ্ছে আপনার গ্রামের উত্তর পাড়ার রবীন্দ্রনাথ। অর্থাৎ, আপনার যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে পূর্ব ধারণা না থাকে এবং বইটি আপনি না পড়েন, তাহলে বইটা কেনা এবং লেখকের নাম জানার কোনো মূল্য নেই।

আলোচিত বইয়ের লেখকের নাম আপনি শুনেও জানতে পারেন। ধরুণ, আমি শুধু বইটির লেখকের নাম জানি, আরেকজন বইটি তিনবার পড়েছে। আমাদের দু'জনের জানার তফাৎটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।

এখন আমাদের দেশের চাকরির পরীক্ষায় আসলো- "শেষের কবিতা" কে লিখেছে? সেক্ষেত্রে আমিও পারব, আপনিও পারবেন এবং দু'জনেই পূর্ণ নম্বর পাবো। এবং দিনশেষে ফলাফলে আমি এবং আপনার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। না, পার্থক্য আছে- যে বইটা পড়ে নেই, সে ঐ সময়ে বসে ছিল না, নিশ্চয়ই কিছু না কিছু করেছে, হয়ত রাঘববোয়ালদের কাছে দৌঁড়ঝাপ করেছে, অর্থাৎ যে বইটি একবারও পড়েনি আমাদের বাজারে সে-ই এগিয়ে রয়েছে।

বই পড়ার সাথে মননশীলতা এবং জীবনবোধের সম্পর্ক রয়েছে, না পড়ার সাথে অবহেলা, এবং ফাঁকি দেওয়ার মানসিকতার সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতি (বিশেষ করে চাকরির পরীক্ষাগুলোতে) একেবারেই মুখস্থ নির্ভর, যা দিয়ে মেধা যাচাই তো হয়ই না, মানুষের মননশীলতার যাচাইও হয় না।
এর মানে এই না যে সবাইকে খুব পড়াশুনা করতে হবে, এবং পড়াশুনা করলে সে ভালো, আর পড়াশুনা না করলে সে ভালো না। কিন্তু পরীক্ষার প্রশ্ন এমন হওয়া উচিৎ যাতে বেশি জানা এবং বেশি পড়াশুনা করা য়ায় এবং বেশি মেধাবী শিক্ষার্থীই গুরুত্ব পায়।