ঘুমিয়ে থাকার দিন শেষ, আসুন জেগে উঠি

ঊর্মি খান
Published : 11 May 2012, 05:10 PM
Updated : 11 May 2012, 05:10 PM

বংলাদেশের চলমান রাজনীতি এই মুহূর্তে কোন নীতিতে চলছে? গণতন্ত্রের নাম ভাঙ্গিয়ে এদেশের নষ্ট রাজনীতিকরা কি দেশের মানুষের মাথা কিনে নিয়েছে? যখন যা ইচ্ছে তাই জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়ে তারা বহাল তবিয়তে দিন যাপন করছে। বাংলাদেশে সহস্র সমস্যা; সকল সমস্যার ভেতর থেকে অন্তত কয়েকটি নিয়ে যদি সরকার প্রানবন্ত চিন্তায় সামান্য একটুখানি মনোনিবেশ করত তবে সমস্যাগুলো শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ নিরসন করা সম্ভব ছিল বলেই মনে করি।

এদেশে যা কিছু চলছে তা জনগণের জন্য নয়, সবকিছুই চলছে রাজনীতিকদের সুবিধার জন্য। বাংলাদেশের মন্ত্রী-এমপিরা জনগণের কাঁধে বন্দুক রেখে; জনগণের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধী করছে। তাদের নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্য নিজের এবং আত্নীয়স্বজনদের আখের গোছানো;মোটা অঙ্কের ঘূষ গ্রহণের মাধ্যমে বড় বড় পোস্টে চাকুরী প্রদানের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়া; অথচ সাধারণ মানুষ তাদেরকেই ভোট দেয়। আমরা নিজেদের অধিকার নিজেরা বুঝে নেওয়ার জন্য সচেতন নই। আজকে দেশের মানুষ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর সরকার নিজের ইচ্ছেমত সবকিছু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়। এটাই '৭১ এ পাওয়া বিজয় আর '৯০ তে পাওয়া গণতন্ত্রের সুফল।

সমস্যা নিরুপণের জন্য প্রথমে গোল বা চৌকোনা টেবিল বৈঠক; তারপর সেই সমস্যা নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ; বাজেট…ইত্যাদি করতে করতে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় চলে আসে এবং তখন তারা পুণরায় নির্বাচিত হতে পারলে সেই সমস্যা সমাধান করার অঙ্গীকার করে জনগণকে পুণরায় ঠকানোর জন্য মন ভোলানো নির্বাচনী ওয়াদায় আকৃ্ষ্ট করে; আর জনগণও এমনি বোকার বোকা তারা পূর্বের সব কিছু ভুলে গিয়ে নতুন করে আবারও নিজেদের পশ্চাদ্দেশে নিজেরাই নিজেদের অজান্তে লাথী মারে। হায়রে অভাগা জনগণ…

আজ যদি একযোগে মানুষ ভাবতে পারত যে, দেশের এই পালাবদলের সরকার আর নয় এবার লড়াই হবে সকল জালীমদের বিরুদ্ধে তবেই সম্ভব সকল অরাজকতার অবসান করা। তা না হলে ধুকে ধুকে এভাবেই মরতে হবে পূর্বপুরুষদের মত…

দেশের মানুষ ভাত পায় না অথচ এই বাংলার রাস্তায় কোটি কোটি টাকা দামের বীনা শুল্কের গাড়ি চলে। ফূটপাথে ঘুমন্ত শিশুর কান্নায় ভারী হয় বাতাস। আর এমপি হোস্টেলগুলো ফাঁকা পড়ে থাকে অনৈতিক কাজের জন্য। এদেশের মালিক মূলত কারা?–জনগণ; গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রকৃত মালিক কে?–জনগণ।তাহলে দেশের বড় বড় কর্মকর্তাদেরকে কেন আমরা সাধারণ মানুশ স্যার বলে ডাকি? যে কৃ্ষক রোদে পুরে মাঠে কাজ করে বলে দামী চেয়ারে বসার অধীকার রাখে না; সার কিনতে গিয়ে শহীদ হয়; টাকার অভাবে খাবার খেতে পায় না মজুর, শ্রমিক সেই দেশকে গনতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দাবী করা হচ্ছে কেন? কোথায় আছে গণতন্ত্র? গণতন্ত্র কি শুধুই সংবিধানে লিখিত কিছু কালো হরফের ধোকাবাজী? গনতন্ত্র কি ঘুমিয়েই থাকবে? গণতন্ত্রের নামে এই ধোকাবাজী কতদিন দেখবে বোকা মানুষগুলো?

আর কতদিন বাংলার মানুষ মিথ্যা প্রলোভনে বশ করে ইচ্ছের বলী করে রাখা হবে? আর কতদিন সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলতে থাকবে বাংলার স্বধীনতা? বেডরুমে পরম নিশ্চিন্তে যদি ঘুমানোর নিশ্চয়তাটুকুও না থাকে তবে গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে যারা চিল্লিয়ে ভন্ডামী করছে—–আসুন তাদেরকে রুখে দেই; তারা যাতে আর আমাদেরকে শোষন করতে না পারে; আমাদের মাথায় যাতে আর কাঁঠাল ভেঙ্গে খেতে না পারে সেই জন্য আমরা আমাদের এই যুদ্ধ অবিরত রেখে; পালাবদলের সরকারকে আর ভোট না দিয়ে তৃতীয় শক্তিকে জাগ্রত করি। নেতৃত্ব তৈরী করি আমাদের ভেতর থেকেই। আমরাই পারি সকল ব্ল্যাক পলিটিক্সের অবসান করতে। সকল ক্ষমতাতো আমাদেরি হাতে। তাহলে ভয় কি মরণে?আসুন সবার সামনে নিজেদের মাথা উঁচু করে বলি, আমরা তামাটে জাতি; আমরা এসেছি। আসুন আমরা নূরুলদিনের মত বলি—জাগো বাহে; কুন্ঠে সবাই…

জয় আমাদের সুনিশ্চিত।