এ কে এম নূরুল হক ,
ছবিতে বাদিকের প্রথম, একাত্তরে তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান বেতার বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী, কর্মস্থল ছিল ঢাকা । ২৯ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি দল মহাখালীর ওয়্যারলেস ক্যাম্পাসে তাঁর সরকারি বাসা থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তাঁর আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী নির্যাতনের পর হত্যা করে তাঁকে অজ্ঞাত গণকবরে মাটিচাপা দিয়েছে।
পাকিস্তানের হরিপুর স্টাফ কলেজে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম ডেভালাপ ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনের জন্য, ১৯৬১ সালে তিনি 'তমঘা-ই-ইমতিয়াজ' খেতাব পেয়েছিলেন । অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে তিনি পাকিস্তান সরকারের দেওয়া খেতাব পরিত্যাগ করেছিলেন স্বেচ্ছায়। সে সময়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল তাঁর। এ ছাড়া এমন কথা প্রচলিত আছে যে ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারে তাঁর প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল।
'…খোকা (এ কে এম নূরুল হক) ও তার সহকর্মী লোকমান হোসেন সাহেব মার্চ মাসের অসহযোগ আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। এদের দুজনকে বাসা থেকে সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কোনো খবর তখন পর্যন্ত কেউ জানে না। লোকমান সাহেব সত্যি ভাগ্যবান, যুদ্ধের নয় মাস বন্দী অবস্থায় থেকেও প্রাণে বেঁচে যান। খোকা আর কোনো দিন ফিরে আসেনি।'- তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন , সাবেক সচিব নূরুদ্দিন আহমদ।
'…২৫ মার্চ বেলা গড়িয়ে দুইটা বা আড়াইটার সময় ইঞ্জিনিয়ার নূরুল হক সাহেবের সঙ্গে আমার শেষ সাক্ষাৎ।…পূর্বের একটি আলোচনার সূত্র ধরে তিনি বললেন বঙ্গবন্ধু আমাকে একটি ট্রান্সমিটার আনতে বলেছিলেন। সেটি খুলনা থেকে আমি আনিয়ে রেখেছি। আমি এখন ওটা দিয়ে কী করব, সে বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে নির্দেশনা চাই।'– 'স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও আমাদের সংবিধান' গ্রন্থে লিখেছেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম
তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমদ লিখিত নেতা ও পিতা বইয়ে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহযোগী হাজি গোলাম মোর্শেদের সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে কিছু তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন, 'এরপর এগারোটা বেজে গেল, বারোটা বাজে বাজে এমন সময় একটি টেলিফোন আসল, বলে আমি বলধা গার্ডেন থেকে বলছি। মেসেজ পাঠানো হয়ে গিয়েছে। মেশিনটি কী করব? আমি দৌড়ে মুজিব ভাই-এর কাছে গেলাম, বললাম মেজেস পাঠানো হয়ে গেছে। উনি (বঙ্গবন্ধু) বললেন, মেশিনটি ভেঙে ফেলে পালিয়ে যেতে বলো।