একটি ছবির গল্প এবং ফলাফল
মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী একটি ভ্যান রিক্সায় বসে আছেন -কোলে বসা তাঁর নাতি , সাথে পরিবারের অন্যান্য সদস্য । তিনি উদযাপন করছেন ভ্রমণ , অবলোকন করছেন পারিপার্শ্বিক , রোমন্থন করছেন তাঁর হারানো শৈশব স্মৃতিময় দিনগুলো । গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া ঘটনা স্থল । এই ছবি দেখে আমজনতা – কেউ উচ্ছ্বসিত, কেউ উদ্বেলিত, কেউ হতাশ, কেউ আশাবাদী, কেউ প্রতিবাদী, কেউ খুশি , কেউ অখুশি , কেউ দুর্বিনীত, কেউ নির্লিপ্ত , কেউ বললে ঢং , কেউ চড়ালে রং ।
আমজনতা’র বক্তব্য ক্রিস্টাল ক্লিয়ার
রাষ্ট্রের প্রজা সাধারণ ,সদা সর্বদা প্রজাই থাকেন – তুলনায় প্রজা সাধারণ , রাজার নখেরও যোগ্য নন। গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র , একনায়কতন্ত্র কিংবা সমাজতন্ত্র দ্বারা শাসিত রাষ্ট্রতন্ত্রে – যিনি রাজা তথা শাসক , তার উদ্দেশ্যে আমজনতার সম্মুখ বন্দনা গীত কিংবা পশ্চাৎ নিন্দা গীত গাইবার ইতিহাসটি এই বাংলায় সুপ্রাচীন এবং এটিই প্রচলিত রীতি। রাজা , প্রজাগণের বন্দনায় আপ্লুত হন আর প্রজা গাইতে পেরেই নিজেকে ধন্য মনে করেন। ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রপ্রধানদের দলীয় আমজনতারা মূলত ‘অতিমানব’ হিসাবে ট্রিট দেন । তারা ভাব প্রকাশ করতে চান -রাষ্ট্র শাসক , মোটেই হেজি পেজি কোন আম আদমি নন – তিনিই রাষ্ট্রের মূল মালিক !
তিনি রাস্তায় নামার সাথে সাথেই, হুইসেলে হুইসেলে ক্লান্ত হয়ে যাবে বাঁশী , শূন্য হয়ে যাবে রাজপথ । তিনি অর্ডারও করবেন না শুধু ইশারায় দেবেন সাড়া- তাতেই সমস্ত নগরী অন্ধকারে আক্রান্ত হবে অথবা নিকষ কালো অন্ধকারের নগর -আলোয় ঝলমলিয়ে উঠবে আচমকা অকস্মাৎ ।
তা এই যখন -আমজনতার মনস্তাত্ত্বিক কন্ডিশন , তখন মহামান্য রাষ্ট্রপ্রধান ভ্যান রিক্সায় চড়ে বসলে -তারা ব্যকুল এবং দিশেহারা হয়ে পড়বেন এটাই স্বাভাবিক! এবং হল সেটাই -এইরকম মমতাময়ী বুবু , মা, খালা , নানী কিংবা দাদী তারা ইতোপূর্বে এই বংগদেশে কভু দেখেছেন , মনে করতে পারলেন না সেই ইতিহাস। অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বী মহলে যৌক্তিক কারণেই এই ভ্যান-ভ্রমণ দ্বারা তাদের কোন তৃপ্তি বা সুখ লাভ হল না , তারা বরং রাগান্বিত হয়ে ম্রিয়মাণ হলেন – বিমর্ষ হলেন অবশেষে । ক্রমে ক্রমে বার্তা রটে গেলে, ভাইরাল হল সেই ছবি। রাষ্ট্রপ্রধানের দিন যাপনের ছোট একটি ক্লিক – যা ছিল ঘটনা , হয়ে গেল তা কাহানী ! সংশ্লিষ্ট প্রজাদের লাইক আর শেয়ারে শেয়ারে – অল্প স্বল্প গল্প -হয়ে গেল রূপকথার এক গল্প ! অতঃপর যথানিয়মে নিউটন তৃতীয় সূত্রানুযায়ী – বিপক্ষীয় শক্তি নিজ নিজ উঠানে , খুলে বসলেন বিষেদাগারের দোকান । দেশের অপরাপর কোন কোন রাষ্ট্র নায়কগণ -অলরেডি এই জাতীয় ‘মাটি ও মানুষ’ কর্মকান্ডে – আরও আগেই অংশ গ্রহণ করে ফেলেছিলেন -সেই তথ্য উন্মোচিত করার কর্মে নিয়োজিত হলেন কতিপয়।
স্বামী যখন রাষ্ট্রপ্রধান
আতাতায়ী’র গুলিতে নিহত হলেন তিনি । স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর রাজনীতির শুরু । হয়েছিলেন দেশের প্রভাবশালী প্রধানমন্ত্রী । দুই সন্তানের মা ছিলেন তিনি , এক সন্তানকে ক’দিন আগেই চিরকালের জন্য কবরে ঘুম পাড়িয়ে এখন তিনি একা এবং সুস্থ পদচারনায় সক্ষম নন । বেঁচে আছে তাঁর একমাত্র যে সন্তানটি -যার কথায় সমগ্র দেশ উঠত বসতো একদিন , সেই প্রচণ্ড ক্ষমতার অধিকারী রাজপুত্তুরটি এখন কেইস কামারী খেয়ে দিন যাপন করছে দেশের বাইরে । তাই সেই সন্তানকে আদরে জড়িয়ে ধরে বুকে -কষ্টের জমানো কিছু পাথর গলাবেন তিনি – না আছে সেটি করবার কোন উপায়।

বুলেটের পর বুলেট
বিদীর্ণ হল সবার বুক , নৃশংস মৃত্যু হয়েছিল স্ত্রী সন্তান নিকট আত্মীয় – এবং মৃত্যু হয়েছিল পিতা’র -যিনি স্বাধীন করেছিলেন দেশ। দুই বোন সেদিন ছিলেন না সেখানে , তাই বেঁচে গেছিলেন , কিন্তু মুহূর্তেই সব হারিয়ে জানলেন- জারী হয়ে গেছে দেশে ফেরার নিষেধাজ্ঞা । দেশ থেকে নির্বাসনে থাকলেন বহুদিন। তারপর দেশে ফিরে নিয়োজিত হলেন পুনরুদ্ধারে । একদিন গ্রেনেড আঘাতে তাঁর নিজেরও মৃত্যু হয়ে গিয়েছিল প্রায় , মৃত্যু হয়েছিল সাথিদের , তিনি আঘাত প্রাপ্ত হয়েও বেঁচে গেলেন স্রষ্টার অসীম কৃপায় -তিনি এখন দেশের প্রধানমন্ত্রী।
স্বপ্নের শৈশব আর ফেলে আসা সেই সব দুরন্ত দিন , এসব পালনের অধিকার তবে কী শুধুই আমজনতার ? রাষ্ট্র নায়কের জীবন অতি মহান , তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হলে -হতাশ হয় কী আমজনতা ? তাহলে কেন আমজনতা, রাষ্ট্র নায়কের ভ্যান যাত্রায় দিশেহারা হয়ে- মুগ্ধ আর ক্ষুব্ধ হয় -বলতে কী পারেন কেউ?
ওহে মহামান্য আমআদমী ভাইয়েরা আমার ! বলি মখা আলমগীর সাহেব শরীরের নিম্ন পশ্চাৎ-দেশে যে ক’টা গরম ডিম নিছিলেন একদা , সমান সংখ্যক গরম ডিম ঊর্ধ্বাংশে অবস্থিত তোমার নিজ মুখে ,আজ পর্যন্ত খেয়ে দেখবার সুযোগ পেয়েছিলে কী তুমি ? এই বৃদ্ধ বয়সেও আলমগীর সাহেব দিব্যি রাজনীতি করেই খাচ্ছেন। আর মির্জা ফখরুল সাহেব , আজ পর্যন্ত যে কবার আদালতে হাজিরা দিয়েছেন -তত সংখ্যক জন্মদিন কী এসেছিল তোমার জীবনে ? কোর্ট হাজিরা বাদ দেও ভায়া, তার আগেই – পুলিশ রিমান্ডে তোমার বাবার নাম জানতে চান যদি , জানি তাতেই তোমার পেশাব হয়ে যাওয়ার কথা ! মির্জা ফখরুল এখনও একাই কাঁধে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন , তেনার সঙ্গী শুধুএকখানা মাইক। মহান আমজনতা, ধরে নিলাম -নেতারা সুখে খান দান ঘুমান , আর ধরে নিলাম -তুমি না খেয়ে শুকিয়ে মরতে বসেছ – তা নেতাদের জীবনের যাবতীয় এই সব পেরেশানি সমূহ – তার হাজার ভাগের এক ভাগ দিলে- কাঁধে সইবে কী সে ওজন ?
ছিলেন স্বৈরাচারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল
কালের পরিক্রমায় হোমোজিনিয়াস না হয়েও যিনি হয়ে গেছিলেন লেজে হোমো । আমজনতা তুমি বলবে- তিনি তো এখন হাতে চুড়ি পিন্দা বইসা আছেন, তেনার কথা আর কী কমু -তিনি না ঘরকা না ঘাটকা ! কিন্তু এই ৮৭ বছর বয়সেও , জেনে রাখো – তিনি নিয়ম করে জিম করেন -দুই বেলা। আর তুমি তো মাল -এই ছেচল্লিশেই রদ্দিমাল হয়ে এখন আছো ভাংগারী দোকানে চালানের অপেক্ষায় । তাই বলছিলাম, একটু আওয়াজ দিয়ে চিক্কুর মারার আগে – এসব কিছুও একবার ভেবে দেখিও -তারপরই না হয় লম্ফ দিয়া পথ চলিও , ভায়া।
ওহে আমজনতা ভায়া , ক্ষমতা আর কারাগার কিন্তু দেয়ালের এপাশ আর ওপাশ -ফাইনালি কোন ঠিকানায় নির্দিষ্ট হবে তোমার বাস- তুমি তা জানো না । আর বঙ্গদেশে পলিটিক্স এমন এক খেলা-এই খেলার মাঠটি কখন কাদাহীণ , কখন সবুজ- জীবন ভর খেলে যাবে , জানতেও পারবে না , বৃদ্ধ হবে -তবুও রয়ে যাবে শিশুটি অবুঝ! তাই দেশের নেতা নেত্রীদের এই জাতীয় ফালতু পরীক্ষায় অবতীর্ণ করিয়ে , তাদের পাশ করানোর নামে তাদের ফেল করিয়ে দেবার যে আয়োজনটি তুমি করছো, বলি তোমার পরীক্ষা নেয় কাহারা? নেত্রীকে মহান করবার বিরক্তিকর মাইকিং এইবার ক্ষ্যান্ত দেও ভাই। যদি পারো নিজেরে এইবার কিঞ্চিৎ কাজে-কামে নামাও , অসুবিধা নাই তুমি ফেসবুকেতেই থাকো – তবে উচ্ছ্বাস একটু কমাও । অনেক গেয়ে ফেলেছো , কেত্তন এবার একটু থামাও । নেত্রীকে রিক্সা অথবা ভ্যানে চড়ে বসতে দেখলেই বাক্যহীন হয়ো না হুদাই। অনেক বন্ধুর পথ তারা দিয়াছেন পারি । ভারি কোদালের তীক্ষ্ণ কোপে, তেনারা খাল কাটতে যদি পারেন -বন্যায় সেই খালে পানি আটকে গেলে -তাতে নামতেও পারবেন তেনারাই । তুমি আপাতত ক্ষ্যাতা মুড়ি দিয়া এইবার একটু ঘুমাও ভাই!
খুব সাধারণ দিন যাপনের সুতীব্র ইচ্ছা -নিজের আকাশে ঘুড়ি হয়ে নিজেরই উড়িবার সাধ- আরও কত কত সব শখ -সব গেল নির্বাসনে, সব হল বরবাদ ! একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মাননীয় রাষ্ট্রপতি স্বীকার করেছেন দ্বিধাহীন – প্রেসিডেন্টের লাইফ মূলত এক শৃঙ্খলিত জীবনের নাম – এ জীবন শুধু যাপনের তা উদযাপনের নয়।
“রাষ্ট্রপতি হবার প্রথম দিন -একটি ডিম পোচ খেতে গিয়ে পেলাম , ডিমের ওয়ান থার্ড খাওয়া – মানে ডাক্তার আগে খেয়ে পরীক্ষা করেছেন -খেয়ে যদি ডাক্তার মারা না গিয়ে থাকেন তাহলে সেই ডিম পোচ আমি এখন খেতে পারি। খেয়ে মরব এই স্বাধীনতা টুকুও আমার নেই । দরজা খোলা রেখে ঘুমাবো সেই সুযোগও এখানে বন্ধ , যদি ঘুমের মধ্যেই মরে যাই ! সেটা হবে রাষ্ট্রের জন্য আরেক বিপদ ! সকাল বেলা স্ত্রীকে সিস্টার ইনসুলিন দিচ্ছিলেন , জানলাম – প্রতিটির দাম নয়শ টাকা , একটিতে যাবে দুই দিন । সাথে আছে আরও অনেক ওষুধ -সব মিলে দিন প্রতি ,আমার স্ত্রীর পেছনেই ওষুধ খরচ প্রায় একহাজার টাকা । এখন রাষ্ট্রপতি তাই আছে স্ত্রী ফ্রি চিকিৎসা সুবিধা , কিন্তু পরে যখন আমি আর রাষ্ট্রপতি থাকবো না -তখন কে এই খরচ দেবে? এই জিজ্ঞাসার জবাবে স্ত্রী বলেছিলেন – কেন তুমি দিবা ? আচ্ছা আমি বিয়ে করেছি ভাত কাপড়ের জন্য , বলেন তো আপনেরা স্ত্রী’র ইনসুলিনের দায়িত্ব কী আমার? হায়রে প্রেসিডেন্টের জীবন ! – মাননীয় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ

চার্লি চ্যাপলিন
ইতোমধ্যে তিনি বিখ্যাত। মন্টি কার্লোতে একটু পরেই শুরু হতে যাচ্ছিল চার্লি চ্যাপলিনকে অনুকরণ করবার একটি প্রতিযোগিতা। পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন চার্লি , আচমকা নজরে পড়তেই তিনি ভাবলেন- এই মোক্ষম সুযোগটি হাতছাড়া করার কোন মানেই হয় না! সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে স্বয়ং চার্লি নিজেই গিয়ে নাম লেখালেন প্রতিযোগিতার খাতায় । আয়োজক বা দর্শক কেউই চিনতে পারলো না তাঁকে। তিনি সেখানে প্লে করলেন যথেষ্ট মুন্সিয়ানায় -জুরীর ফলাফলে চার্লি চ্যাপলিন হলেন থার্ড। আরেকবার সানফ্রানসিসকোতে ঠিক এই রকম একটি আয়োজনেই সিকিউরিটি ঢুকতে বাঁধা দিল চার্লিকে- কেননা তাঁর জুতো এবং গোঁফ অরিজিনাল চার্লি’র অনুরূপ ছিল না বলে ।
পাবলিক , কল্পনার মানুষটিকেই খুঁজে বেড়ায় ,কল্পনার মানুষটিকেই দেখতে চায় -তাই অরিজিনাল মানুষটি কখনও কখনও হেরে যায় ডুপ্লিক্যাট মানুষটির কাছে। আর ক্ষমতাহীন অক্ষম মানুষকে মনে রাখে না ইতিহাস। তাই নিতান্ত ব্যক্তিগত দুঃখবোধ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে তিনি বলেছিলেন –
“আমি হাঁটি বর্ষায় , অশ্রু যেন কেউ টের না পায় , আর আমি আয়নায় দেখি মুখ -যখন হাসি যখন কাঁদি -শুধু আয়নাই দেখায় ঠিক মুখ”

ছবিঃ ইন্টারনেট
সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেনঃ
সকালে হটাৎ করেই পেয়ে যাওয়া একটু সুযোগে লেখাটা জোরে জোড়ে পড়ে গিন্নীকে শোনালাম! তিনি হাঁসতে হাঁসতে শেষ!
— আপনার সেন্স অফ হিউমার দারুণ!
উৎপল চক্রবর্ত্তী বলেছেনঃ
প্রিয় সুকান্ত
আপনি আমার লেখা পড়েন এবং নিয়মিত মন্তব্য করেন – এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মন্তব্য আমি আপনার কাছ থেকেই পেয়েছি – আই ওড লাইক টু স্যালুট ইয়ু ম্যান । বৌদিকে শুনিয়েছেন শুনে খুব ভাল লাগল । বৌদি এবং আপনাকে দুজন’কেই জানাচ্ছি শুভেচ্ছা ।
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
ক্ষমতাবান ব্যক্তিগণ ক্ষমতা টিকে রাখার জন্য কত না অভিনয় করে থাকে!
একটা তামিল ছবি দেখছিলাম দাদা, ছবির ভিলেন হলেন একজন রাজনৈতিক নেতা এবং লোক দেখানো গরীবের বন্ধু ৷ একদা তার বাড়িতে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজনে অনেক সাধারণ মানুষও সেই অনুষ্ঠানে ভোজনের নিমন্ত্রণ পায় ৷ সেই অনুষ্ঠানে খাওয়াদাওয়ার পর্বে সাধারণ মানুষও দুই সারিতে মাটিতে বসে কলাপাতায় খাবার খাচ্ছে, নেতাজী সারিবদ্ধ ভাবে বসা সাধারণ মানুষের খাওয়াদাওয়ার মাঝখান দিয়ে যেতেই এক গরীব বৃদ্ধলোকে বললেন, কেমন খাচ্ছেন? বৃদ্ধলোক বললেন, বেশ ভালো খাচ্ছি নেতাজী! এরপর নেতাজী সঙ্গে থাকা মিডিয়াকে দেখানোর জন্য হাত পেতে ওই বৃদ্ধকে বললেন, দাদা আপনার খাওয়া পাতের থেকে আমাকে একটু প্রসাদ দেন, আমি ভক্তিভরে তা খাবো ৷ একথা শুনে ওই বৃদ্ধলোক তো মহা খুশি ৷ সাথেসাথে বৃদ্ধ তার খাওয়া পাত থেকে একগরস খাবার নেতার হাতে তুলে দেয়, নেতাজী মিডিয়াকে দেখিয়ে বৃদ্ধের দেয়া খাবার মুখে পূড়ে দিয়ে হাসতে হাসতে তা মিডিয়াকে দেখিয়ে দেখিয়ে চিবুচ্ছে আর হাঁটছে ৷ হাঁটতে হাঁটতে নেতাজী এক ঘরে গিয়ে সেই বৃদ্ধের দেয়া খাবার মুখ থেকে ফেলে দিয়েও আবার গলায় আঙ্গুল দিয়ে বমি করা প্রস্তুতি নিচ্ছে ৷ নীচু জাতির খাবার মুখে দিয়ে শুধু অভিনয়ই করেছে নেতাজী, আসলে তিনি ওই খাবা তার উদরে ভরে নি ৷ সবই অভিনয় আর ছলচাতুরি আর লোক দেখানো দাদা ৷
আবার সব নেতাররা নয়৷
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
উৎপল দাদা, মন্তব্যে সর্ব নিচে একটা বানান ভুল আছে ৷তা হলো ‘খাব’ হবে ‘খাবার’ শোধরে নিবেন দাদা ৷
উৎপল চক্রবর্ত্তী বলেছেনঃ
নিতাই দা ,
আপনি সঠিক বলেছেন । অবশ্য আমি এখানে, নেতাদের চাইতে আমজনতা মানে আমরা যারা প্রতিনিয়ত নেতা নেত্রীদের সমালোচনা -আলোচনা করে চলছি -তাদের অংশটুকুই বেশি বলতে চেয়েছি । দেশে ক্ষমতার নায়ক’দের জীবনের ঝক্কি কিন্তু আমাদের চাইতে অনেক বেশি – ফাইনালি তারা কিন্তু জীবন’টা তেমন ভোগ করে উঠতে পারেন না – যতটুকু আমরা পারি।
আপনাকে ধন্যবাদ।
মঞ্জুর মোর্শেদ বলেছেনঃ
আসলে প্রধানমন্ত্রীর রিকশা ভ্যানে চড়া সাথে তিন জেনারেশনকে প্রতিনিধিত্ব করা , এসব দেখে মানুষ আপ্লুত হবেই । কারণ টা খুব সিম্পল । উনার আনটাচএবল । ওনারা সেলিব্রিটি। যদিও করেন গণমানুষের রাজনীতি । ভারতেও একটা আনটাচএবল শ্রেনী আছে দলিত সম্প্রদায় । এই দলিত রা কোন কিছু ছুলে নাকি অপবিত্র হয়ে যায় । দুটোই এক্সট্রিম উদাহরণ ।একজনকে মানুষ ছুঁতে চায় কিন্তু পারে না । আরেকজন মানুষের সাথে এক কাতারে আসতে চাইলেও পারেন না । ফলাফল একই । জনবিচ্ছিন্নতা ।
একটু হাইপথেটিকালী ভাবলে যদি ওনার বাবাকে এভাবে ক্যামেরা বন্দি করা হত এসময়ে মানুষ একে স্বাভাবিকই ভাবত। কারণ উনি মনে প্রানেই ছিলেন তাই । গণমানুষের নেতা বলতে যা বুঝায় ।
চ্যাপলিনের প্রসঙ্গ টা ভালো লেগেছে । যতটুকু জানি এই লিটল ট্র্যাম্পকেও আমেরিকা ভিসা দেয় নি , ওনার গায়ে কমুনিস্টের গন্ধ ছিল বলে ।
আমাদের মানসপটে নেতাদের নিয়ে আপনার আঁকা ছবি টা আসলে সত্যিই মনে করিয়ে , ইয়েস দে আর আনটাচেবল ।
উৎপল চক্রবর্ত্তী বলেছেনঃ
আসলে রাজনীতিবিদ বা সেলিব্রেটিদের নিত্যদিন যা দেখি , আমি সম্ভবত সেই ঘ্যানর ঘ্যনর কাহানী’টি চাই নি বলতে । তেনারা আনটাচেবল কথা ঠিক -কিন্তু আমরা যারা আমজনতা , আমাদের নিম্ন নিম্নমধ্যবিত্ত মধ্যবিত্ত জীবনের -চীর চেনা না পাওয়া অপ্রাপ্তি গুলোর সাথে , তাদের উচ্চবিত্ত জীবনের অনেক গভীর না পাওয়ার বেদনার কথাটি বলতে চেয়েছি । আমরা তাদের খেলার পুতুল -আবার এই পুতুল খেলতে গিয়েই তাদের জীবনে যে ঘোর অমানিশা নেমে আসে -সেই অন্ধকারের গল্পটি । যেহেতু রাজনীতিবিদ (প্রচলিত অর্থে) কিংবা সেলিব্রেটি আমরা নই – তাই আমরা দেখি তাদের শাসন শোষণ সিনেমা আর স্পোর্টস , কিন্তু তাদেরও আছে হাজার পেরেশানি ! সেই পেরেশানি’র যন্ত্রণা অনুভবের সামর্থ্য আমাদের নেই! চোখ বন্ধ করে নিরপেক্ষ হয়ে ভাবুন – আমরা পারবো না নিতে -এই জীবনের অনেক ওজন!
মঞ্জুর ভাই আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বাংগাল বলেছেনঃ
ওহে ভ্রাতা উৎপল চক্রবর্তী মান্যবরেষূ , ………’ ষূ ‘ যদি ভুল হয় তাহা হইলে নিজ গুনে ক্ষমা করিবেন ।আপনার বহুল পঠিত পোস্টখানা আমার কঠোর নজরদারিতে ছিল বিগত দিনে । আমি অনুধাবন করিতে পারিয়াছি যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানগাড়িতে বসিয়া পোজ দেওয়া স্থির চিত্র দেখিয়া আপনিও গদগদ হইয়া গিয়া অতি চমৎকার এই নিবন্ধ খানা রচনা করিয়া বসিয়াছেন । ইহাতে আমাদের কাহারো কাহারো উষ্মা উদগিরন করিয়া চিত্তবেদনার কারণ ঘটাইয়াছেন।
আমি এযাবৎকাল আপনার লিখিত সুনিবন্ধসকল পাঠপূর্বক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি যে আপনা কর্তৃক অতিউত্তম ব্লগ লিখিত হইয়া বিডি ব্লগ সমৃদ্ধ হইতেছে । কিন্তু আপনার আরও কতিপয় দায় দায়িত্ব সম্পর্কে আমি আপনাকে স্মরন করাইয়া দিতে প্রয়াস পাইতেছি । আপনি এইরূপ সুনিবন্ধ রচনা করিয়া একজন সাবেক হইয়া যাওয়া প্রধানমন্ত্রী ,তাঁহার শহীদ হইয়া যাওয়া প্রেসিডেন্ট স্বামী এবং তাঁহাদের ক্রিকেটানুরাগী ( স্মর্তব্য- হাওয়া ভবন সংলগ্ন মাঠে ৩০ এপ্রিলের ঐতিহাসিক ক্রিকেট ম্যাচ ) দুই সুপুত্রের কীর্তিগাঁথা দ্বারা আমাদিগের ন্যায় আজীবন ভক্তবৃন্দের মনোরঞ্জনের বন্দোবস্ত করিতে পারেন । ইহাতে আমাদিগের চিত্তচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পাইবে , আপনার লিখিত পোষ্টের পাঠক সংখ্যা (হিট ) লক্ষগুণ বৃদ্ধি পাইবে ।
সম্ভব হইলে আপনার রচনায় শহীদ প্রেসিডেন্টের তৈলের পিপার উপর দন্ডায়মান হইয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ রাখিবেন । আপনি যেহেতু কুমিল্লাজেলা সম্পর্কে যাহার পর নাই ওয়াকিবহাল সেহেতু প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কুমিল্লায় সন্মুখ সমরের বীরত্বগাঁথা সবিস্তারে বর্ণনা করিবেন , কানের গোড়া দিয়া শাঁ শাঁ গুলি চলিয়া গিয়াছে , অল্পের জন্য শহীদ হইতে পারেন নাই , এইরূপ ঘটনা কিছু কিছু হয়তো আপনার সামনেও ঘটিয়া থাকিতে পারে ( ৪৬ বৎসর বয়স যেহেতু ) উল্লেখ করিয়া একটি ঐতিহাসিক রচনা লিখিবেন । ইহাতে উভয় পক্ষ আপনার উপর সন্তুস্ট হইবে ।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কোন এক জন্মদিবসে আমিও গদগদ হইয়া একটি শুভেচ্ছা জ্ঞাপনমূলক পোস্ট রচনা করিয়া ছিলাম , কিন্তু কতিপয় পাঠকের মনোকস্টের কারণ হওয়ায় আমার এইরূপ কর্মের উৎসাহে ভাটা পড়িয়া গিয়াছে । তাঁহাদের বক্তব্য অনুযায়ী আমার নিবন্ধখানা নাকি তেলচুবচুবে হইয়াছে ।
আমি অনেক খাটাখাটুনি করিয়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁহার বংশবদ লইয়া একটি পোস্ট রচনা করিয়া তাঁহার আজীবন ভক্তবৃন্দের মনোবাঞ্ছা পূরণ করিতে সক্ষম হই নাই । ভ্রাতা আপনার কলমের যেই রূপ ধার পরিলক্ষিত হইতেছে তাহাতে আমার বিশ্বাস আপনিই পারিবেন সেইরুপ তেল চিটচিটে একটি পোস্ট লিখিতে । বোনাস হিসাবে সেই পোস্টে যদি সম্ভব হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁহার পরিবারের সদস্যদের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধারের কোন বন্দোবস্ত করিতেও ভুল করিবেন না আশা করি ।
বাংগাল বলেছেনঃ
ওহে ভ্রাতা উৎপল চক্রবর্তী মান্যবরেষূ , ………’ ষূ ‘ যদি ভুল হয় তাহা হইলে নিজ গুনে ক্ষমা করিবেন ।আপনার বহুল পঠিত পোস্টখানা আমার কঠোর নজরদারিতে ছিল বিগত দিনে । আমি অনুধাবন করিতে পারিয়াছি যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানগাড়িতে বসিয়া পোজ দেওয়া স্থির চিত্র দেখিয়া আপনিও গদগদ হইয়া গিয়া অতি চমৎকার এই নিবন্ধ খানা রচনা করিয়া বসিয়াছেন । ইহাতে আমাদের কাহারো কাহারো উষ্মা উদগিরন করিয়া চিত্তবেদনার কারণ ঘটাইয়াছেন।
আমি এযাবৎকাল আপনার লিখিত সুনিবন্ধসকল পাঠপূর্বক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি যে আপনা কর্তৃক অতিউত্তম ব্লগ লিখিত হইয়া বিডি ব্লগ সমৃদ্ধ হইতেছে । কিন্তু আপনার আরও কতিপয় দায় দায়িত্ব সম্পর্কে আমি আপনাকে স্মরন করাইয়া দিতে প্রয়াস পাইতেছি । আপনি এইরূপ সুনিবন্ধ রচনা করিয়া একজন সাবেক হইয়া যাওয়া প্রধানমন্ত্রী ,তাঁহার শহীদ হইয়া যাওয়া প্রেসিডেন্ট স্বামী এবং তাঁহাদের ক্রিকেটানুরাগী ( স্মর্তব্য- হাওয়া ভবন সংলগ্ন মাঠে ৩০ এপ্রিলের ঐতিহাসিক ক্রিকেট ম্যাচ ) দুই সুপুত্রের কীর্তিগাঁথা দ্বারা আমাদিগের ন্যায় আজীবন ভক্তবৃন্দের মনোরঞ্জনের বন্দোবস্ত করিতে পারেন । ইহাতে আমাদিগের চিত্তচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পাইবে , আপনার লিখিত পোষ্টের পাঠক সংখ্যা (হিট ) লক্ষগুণ বৃদ্ধি পাইবে ।
সম্ভব হইলে আপনার রচনায় শহীদ প্রেসিডেন্টের তৈলের পিপার উপর দন্ডায়মান হইয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ রাখিবেন । আপনি যেহেতু কুমিল্লাজেলা সম্পর্কে যাহার পর নাই ওয়াকিবহাল সেহেতু প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কুমিল্লায় সন্মুখ সমরের বীরত্বগাঁথা সবিস্তারে বর্ণনা করিবেন , কানের গোড়া দিয়া শাঁ শাঁ গুলি চলিয়া গিয়াছে , অল্পের জন্য শহীদ হইতে পারেন নাই , এইরূপ ঘটনা কিছু কিছু হয়তো আপনার সামনেও ঘটিয়া থাকিতে পারে ( ৪৬ বৎসর বয়স যেহেতু ) উল্লেখ করিয়া একটি ঐতিহাসিক রচনা লিখিবেন । ইহাতে উভয় পক্ষ আপনার উপর সন্তুস্ট হইবে ।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কোন এক জন্মদিবসে আমিও গদগদ হইয়া একটি শুভেচ্ছা জ্ঞাপনমূলক পোস্ট রচনা করিয়া ছিলাম , কিন্তু কতিপয় পাঠকের মনোকস্টের কারণ হওয়ায় আমার এইরূপ কর্মের উৎসাহে ভাটা পড়িয়া গিয়াছে । তাঁহাদের বক্তব্য অনুযায়ী আমার নিবন্ধখানা নাকি তেলচুবচুবে হইয়াছে ।
আমি অনেক খাটাখাটুনি করিয়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁহার বংশবদ লইয়া একটি পোস্ট রচনা করিয়া তাঁহার আজীবন ভক্তবৃন্দের মনোবাঞ্ছা পূরণ করিতে সক্ষম হই নাই । ভ্রাতা আপনার কলমের যেই রূপ ধার পরিলক্ষিত হইতেছে তাহাতে আমার বিশ্বাস আপনিই পারিবেন সেইরুপ তেল চিটচিটে একটি পোস্ট লিখিতে । বোনাস হিসাবে সেই পোস্টে যদি সম্ভব হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁহার পরিবারের সদস্যদের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধারের কোন বন্দোবস্ত করিতেও ভুল করিবেন না আশা করি ।
উৎপল চক্রবর্ত্তী বলেছেনঃ
বাংগাল ভাই
আপনি আমাকে পড়েছেন- সেটি একটি উল্লেখ্য ঘটনা । যেহেতু আপনার মহামূল্যবান বদনখানি টেকনিক্যাল কারণে আড়াল করে রাখা -তাই আমি যে হাসি হাসি মুখ’টি দেখতে চেয়েছিলাম আপনার -এখন নির্দ্বিধায় আমি বলতে পারছি ইয়েস ‘বাংগালের মুখ আমি দেখিয়াছি’।
আপনার লেখা পড়ে যতটুকু বুঝেছি -বেশ কিছু ইস্যুতেই আমাদের পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা বিদ্যমান । কিন্তু একটি ব্যাসিক এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সম্ভবত আমরা এক -সেখানে অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হলে – আপনার লড়াই সংগ্রামের মাঠটি’ই আমার মাঠ – আপনার এক বিন্দু ছাড় না দেবার প্রবণতা’টিই আমার প্রেরণা।
আপনি খুব এগ্রেসিভ লেখেন -এইরকম লেখতে গেলে , কলমের কালি’র সাথে বুকের পাটাতনটিও যথেষ্ট প্রশস্ত হওয়া চাই -অপরাপর ব্লগারদের বুকের পাটাতন’টিও ‘সেরাম’ হোক-আর আমার’টাও অন্তত আরো ৫ মিলিমিটার বাড়ুক-এতটুকুই চাই! লেখালেখি বিষয়ে আপনার অন্যান্য পরামর্শ সুপারগ্লু সহ মাথায় ইতোমধ্যে আটকে নিয়েছি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ – ভ্রাতা ।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী
আমি অবাক হয়ে শুনি
কেবল শুনি কেবল শুনি
উৎপল চক্রবর্ত্তী বলেছেনঃ
শওকত ভাই ,
আপনার এপ্রিসিয়েশানের ওজন অনেক।
এক টন অনুপ্রেরণা ।