আমার দূর সম্পর্কের বোনের মেয়ে বাসায় বেড়াতে এসেছে।বয়স ৯-১০।ছোট্ট শিশু,আম্মু কেমন আছ বলে যখন-ই তার দিকে গেলাম দেখি সে এত্ত বড় একটা ঘোমটা দিয়ে আমার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। কিছু বুঝতে না পেরে আমার মার কাছে থেকে জানতে চাইলাম ব্যপার কি,মা বলল, মাদ্রাসায় পড়ে তো তাই পর্দা করছে।
একটা ছোট্ট বাচ্ছা মেয়ে কোথায় সবার সাথে মিশবে,আনন্দ করবে তা না করে পর্দার নামে ঘরের কোনে বসে আছে। নিশ্চয়-ই ঐ মাদ্রাসায় যারা পড়ে তারা সবাই এই রকম পর্দা করে।
যদি এটা হয় তাহলে কি তাদের খুন করা হচ্ছেনা? তাদের মানসিক বিকাশ চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছেনা?পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ হওয়ার এই সময়ে তাদের যদি সমাজ,দেশ ,মানুষ থেকে এইভাবে দূরে রাখা হয় তাহলে বড় হয়ে কিভাবে তারা এই সব নিয়ে ভাববে?
মাদ্রাসায় পড়ুয়া আমার আর এক চাচাত বোনকে দেখেছি যে ঠিক মত কথা বলতে পারেনা। অসম্পূর্ণ এক মানসিক বিকাশ আমি তার মধ্যে লক্ষ্য করেছি।তাকে যখন কোন দোয়া বা সূরা বলতে বলা হয় সে গড়গড় করে বলে দিতে পারে কিন্তু স্বাভাবিক কথাবার্তা সে চালিয়ে যেতে পারেনা। হ্য়ত দেখা যায় সে বড়দের মত কথাবার্তা বলছে নয়তো চুপচাপ থাকছে।সমবয়সীদের সাথে যে এডজাস্টমেন্ট হওয়ার কথা সেখানে সে ফিট হচ্ছেনা।সময় সময় শিশুসুলভ ভাবটি ফুটে উঠলেও কিছুক্ষণ পরে দেখা যায় কি এক অজানা কারনে তা হারিয়ে যায়। মাদ্রাসায় পড়ুয়া এইসব মেয়েরা বড় হয়ে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার হবে সে কথা আমি বলছি না কিন্ত তারা তো সংসার ধর্ম পালন করবে।
এর জন্য যে মানসিক দৃঢ়তা দরকার তা কি তারা পাচ্ছে? সেভাবে কি তাদের কে বিল্ড-আপ করা হচ্ছে?সমাজে টিকে থাকার জন্য তাদের তো এখন থেকে প্রস্তুত করতে হবে।
মাদ্রাসায় পড়ুয়া আমাদের এইসব মেয়ে বা বোনদের মানসিক বিকাশ যে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সে দিকে নজর দেওয়ার সময় কি আসেনি? তা না হলে আমাদের প্রজম্মের একটি অংশ তো পংগু-ই রয়ে যাবে।
কূপমণ্ডুক হয়ে বেড়ে উঠে কিভাবে তারা পরিপূর্ণ মানুষরূপে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করবে?