২০১০ সালের কথা। আগে কখনও মাছ ধরিনি। তো বর যখন বলল, চল একদিন মাছ ধরতে যাই, তখন বেশ খুশি খুশি মনে রাজি হয়ে গেলাম। মিনেসোটার মানুষেরা মাছ ধরতে ভালবাসে, আর ভালবাসাটাই স্বাভাবিক কারণ আমেরিকার এই স্টেটে আছে ১০,০০০ এরও বেশি লেক। শুধু তাই নয়, মিসিসিপি নদীও বয়ে গেছে এই স্টেট দিয়ে।
মাছ ধরবার জন্য এখানে প্রথমেই দরকার হয় লাইসেন্স। লাইসেন্স ছাড়া মাছ ধরা বেআইনী। একটি সুপার ওয়ালমার্টে (ওয়ালমার্ট একটি সুপারমার্কেটের নাম) গিয়ে $১৮ দিয়ে লাইসেন্স করা হলো। তারপর কেনা হলো কৃত্রিম কেঁচো, বড়শি আরও নানা টুকটাক জিনিষে ভর্তি একটি বক্স যেগুলোকে বাংলায় কি বলে জানিও না। মাছ ধরতে এত নানা কিসিমের জিনিষের প্রয়োজন হতে পারে সেটিও ধারণার বাইরে ছিল।
যাই হোক, একদিন সময় করে বিকেলে গেলাম মিসিসিপির তীরে। ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ দেখি মাছ ধরছে, দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত নেই। শেষ পর্যন্ত জায়গা পেলাম কিন্তু ইয়া মাবুদ, দু'ঘন্টা অপেক্ষা করেও কোন মাছকে আমরা আমাদের ফাঁদে ফেলতে পারলাম না! মাছেরা যে মানুষের চাইতেও বেশি বুদ্ধি রাখে সেটি সেদিনই প্রথম জানলাম।
দু:খটা বেড়ে গেল যখন দেখলাম আমাদের কয়েক গজ দূরে দাঁড়িয়ে দু'টি লোক একের পর এক বিশালাকৃতির পাইক ধরছে। বেশিরভাগ মাছ ধরে আবার তারা পানিতে ছেড়েও দিচ্ছেন। আমার বর লোক দুটোকে দেখে নতুন আশার আলো দেখল। দিগুণ উৎসাহে সে বড়শি পানিতে ফেলতে লাগলো। কিন্তু কপাল মন্দ হলে যা হয় আর কি, নদীর তীরের এক ঝোপে আটকে সুতো গেলো ছিঁড়ে, পানিতে ভেসে গেল হুক আর তার সাথে আটকানো আরও দু'টি জিনিষ।