জাগরণের গণজাগরণমঞ্চ !

ওয়াসিম ফারুক
Published : 3 Feb 2016, 08:36 PM
Updated : 3 Feb 2016, 08:36 PM

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের একটি রায় একাত্তরে মানবতাবিরোধী আপরাধী কাদের মোল্লার বিজয় চিহ্নিত দুটি আঙ্গুল আর দম্ভোক্তিতে সেদিন বাংলার দামালছেলের স্হির থাকতে পারেনি । মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারন করে একাত্তরের যুদ্ধাপারাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবী নিয়ে শাহবাগের রাজপথে নেমে এসেছিল কয়েকজন যুবক সেই দাবী বাস্তবায়নের জন্য এর প্রতি একাত্রতা জানাতে একে একে জড়ো হতে থাকে বিভিন্ন বয়সী হাজারো পেশার নারী -পুরুষ যা পরবর্তীতে পরিণত হয় জনসমুদ্রে । আমি বলছি ৫ই ফেব্রুয়ারী ২০১৩ কথা যেদিন শাহবাগে জন্ম নিয়েছিল গণজাগরণমঞ্চ । গণজাগরণমঞ্চ আমাদের ভিতরে এক নতুন প্রেরণার জন্ম দিয়েছে নতুন করে সাহস দিয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর । আর সেই প্রেরণা ও সাহস ই পরবর্তীতে একাত্তরে মানবতাবিরোধী আপরাধী তথা যুদ্ধাপারাধীদের বিচারে গতি এনেছে । সেই গতির কাছে হার মেনেছে সাকার বাকা হাঁসি মুজাহিদ- কামারুজ্জামনদের হুংকার । কথিত আছে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য মহাজোট সরকার ও যুদ্ধাপরাধী জামাত-শিবিরের সাথে সে সময় নতুন বোঝাপড়া ও সমঝোতার পাঁয়তারা করেছিল তার ই ফলশ্রুতিতে কাদের মোল্লার বিচারের রায় কিছুটা প্রভাবিত করে । নতুন প্রজন্মের দাবীর কাছে সেই সমঝোতা আলোর মুখ দেখতে পারে নি ।

যদিও গণজাগরণমঞ্চের কিছু কিছু সংগঠকের ভূমিকাও ছিল বির্তকিত। সেই বিতর্কিত ভূমিকার কারনেই সরকার চেয়েছিল গণজাগরণমঞ্চের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয়ার । পরবর্তীতে সরকার কিছুটা হলে ও স্বার্থক হয়েছিল । তার পর ও গণজাগরণমঞ্চের গতির পরিবর্তন হয়নি । গণজাগরণমঞ্চের জন্ম থেকে ই জামাত-শিবির তথা উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠি নানা ভাবে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছে । ওদের চাপাতি সব সময় তাড়া করে ফিরেছে গণজাগরণমঞ্চের প্রতিটি কর্মীর পেছনে । এই চাপাতির গেরাকলে পড়ে জীবন দিতে হয়ছিল গণজাগরণমঞ্চের কর্মী রাজীব হায়দার শোভনকে । তার পর ও রোধ করতে পারে নি গণজাগরণমঞ্চের পথ চলা । ধর্মব্যবসায়ী জামাত-শিবির তাদের সহায় সম্বল সব দিয়ে চেষ্টা করেছিল গণজাগরণমঞ্চকে প্রতিরোধ করার সর্বশেষ ওরা দেশের সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষদের ভিতর গণজাগরণমঞ্চের সাথে সম্পৃক্তদের সমন্ধে একটি ভ্রান্ত ধারনার জন্ম দেয়ার চেষ্টা করে । আন্দোলনকারীদের ইসলাম ধর্ম বিদ্বেষী নাস্তিক হিসাবে প্রচার করতে থাকে । কিছু ধর্মান্ধ মানুষ ছাড়া মৌলবাদিদের আপপ্রচারে তেমন কেউ সাড়া দেয়নি ।তার পর ও কিছু ধর্মপরায়ণ মানুষ মৌলবাদীদের সাথে সহ অবস্হান নেয় । পরবর্তিতে জামাত-শিবিরের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় আল্লামা শফির নেতৃিতে ইসলাম ধর্ম রক্ষার তথা কথিত আন্দোলনকে গণজাগরণমঞ্চের মুখোমুখি দাড় করায় ।পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম রক্ষার নামে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের নাড়কীয় তান্ডব জাতি আতংকের সাথে উপভোগকরেছে ।

আল্লামা শফির নেতৃতে হেফাজতে ইসলাম সরকারের কাছে তের দফার সম্বলিত একটি দাবীনামা পেশ করে যেখানে চৌরাশি জন গণজাগরণমঞ্চের কর্মীর শাস্তির দাবী করা হয় পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় ঐ লিষ্ট থেকে ছয় জনকে জীবন দিতে হয় ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদীদের চাপাতির কোপে আহত হতে হয়েছে বেশ কয়েক জনকে । আজো গণজাগরণমঞ্চ নানা ঘাত প্রতিঘাত আতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে আপন গতিতে নানা ভবে গণজাগরণমঞ্চের যে অর্জন, সেই অর্জনকে ম্লান করার কোন সুযোগ নেই ।