দেশ কি তাহলে দুর্বৃত্তের?

ওয়াসিম ফারুক
Published : 10 June 2016, 11:30 AM
Updated : 10 June 2016, 11:30 AM

একের পর এক ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হাতে খুনের ঘটানায় এখন আর মর্মাহত হই না কিন্তু উদ্বিগ্ন । ভাবছি শুধুই ভবিষ্যৎ নিয়ে । আজ আমাদের অন্তর শক্ত হয়ে গেছে । কথায় আছে না " অল্প শোকে পাগল আর অধিক শোকে পাথর "। আমরা সমগ্র জাতি দিন দিন পাথরেই পরিনত হতে চলছি । এই পাথর মনে বার বার ই শুধু উকিদেয় সেই একটি পুরোনো স্লোগান " আমরা হবো তালেবান দেশ বানাবো আফগান।" ধর্মীয় উগ্রবাদীদের লালিত স্বপ্ন ক্রমানয়েই বাস্তবায়নের পাথে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই বর্তমান কর্মকান্ডে মনেহচ্ছে। লেখক , ব্লগার শিক্ষক বিদেশী নাগরিক সহ নানা ভিন্নমতাবল্বমীদের খুন মধ্য দিয়ে করে আমাদের কে আফগানের সেই পশ্চাত্য পদে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই চলছে ধর্মীয় উগ্রবাদিরা। আমাদের দেশে উঠতি ধর্মীয় জঙ্গিগোষ্ঠকে হঠাতে আমাদের পুলিশ সহ আইন শৃংখলাবাহিনী অনেকটা ই তৎপর সেই তৎপরতায় ভাটা ও পুলিশ বাহিনী সহ আইন শৃংখলা রক্ষাবাহিনীর মনোবলে আঘাত করতে সম্প্রতি খুন হতে হলো জঙ্গি দমনে সাহসিকতার পরিচয় দেওয়া চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা মো. বাবুল আক্তারে স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে । বাবুল আক্তার কর্মজীবনে নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে একের পর এক স্বার্থক অভিযান চালান জঙ্গি আস্তানায় । চট্রগ্রাম অঞ্চলে ধর্মীয় উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠিদের প্রতিরোধে বিশেষ অবদান রাখেন বাবুল আক্তার । এই কৃতিত্ব পূর্ন অবদানে জন্য পদোন্নতি সহ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ও পেছেন তিনি । শেষ পর্যন্ত জঙ্গিদের প্রতিশোধের পুরস্কার ও যে গ্রহন করতে হবে বাবুল আক্তারকে তা হয়তো ছিল সবার ই ধরানার বাহিরে । বাবুল আক্তার নাকি তার নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন । আশঙ্কায় থাকাটাই স্বাভাবিক কারন আমাদের দেশে আজ পর্যন্ত ধর্মীয় উগ্র জঙ্গিরা যাকেই টার্গেটে পরিনত করেছে তারা সেই টার্গেটকে বাস্তবায়ন ও করেছে । এর আগে প্রতিটি খুনের ঘটনা দম্ভিক ভাবেই দায় স্বীকার করে নিয়েছে নানান নামের জঙ্গি সংগঠন অবশ্য আলকায়দার উপমহাদেশের সহযোগী সংগঠন আনসার আল ইসলাম ও আইএসের নাম ই বেশি এসেছে । মাহমুদা আক্তার মিতু খুনের একই দিনে নাটোরে বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ার খ্রিস্টানপাড়ায় নিজ দোকানে খুন হতে হয় বৃদ্ধ খ্রিস্টান সুনীল গোমেজকে । ইতোমধ্যে সুনীল গোমেজ হত্যার দায় আইএস স্বীকার করে নিয়েছে বলে জানিয়েছে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ ।

মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার পর পর ই আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ও ধারনা করে নিয়েছেন এই হত্যা হয়তো ধর্মীয় উগ্রজঙ্গি গোষ্ঠির ই কাজ । তবে ভাগ্যিস মন্ত্রী মহোদয় বাবুল আক্তারকে স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে নিয়ে অন্য কোন উদাহরন টানেন নি । গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়কে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর অনেকটা একই কায়দায় হামলা নিহত হয়েছেন চারজন ব্লগার-প্রকাশক। এরমধ্যে খুন হয়েছেন দুই বিদেশি। হত্যা করা হয়েছে বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দু ধর্মীয় নেতা ও ভিন্নমতাবলম্বী মুসলমানকে ও। এদের প্রতিটি খুনের ই দায় স্বীকার করে নিয়েছে বিভিন্ন উগ্র ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠন পুলিশি তদন্তে ওএসব হামলা ও হত্যাকাণ্ডের পিছনে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার তথ্য উঠে এসেছে । তবে দূর্ভাগ্য হলে ও সত্যি যে এখনও কোনো হত্যাকাণ্ডের রহস্যই জট খোলেনি। হয়তো মাহমুদা আক্তার মিতুর ও ফেইসবুক আইডি আছে তবে মিতু যে ধর্মিক খুনের সময় তার পরিধেয় পোষাক ই সেটা নিশ্চিত করে । অভিজিৎ , নিলয় বা অন্যান্যরা অনেকেই না হয় ধর্মনিয়ে নান কিছু লেখার কারনে কেউ আবার ভিন্নমতাবলম্বী হওয়ার কারনে খুন হয়েছে । মিতুকে কেন খুন হতে হলো ?

জঙ্গিরা যে খানে তাদের প্রতিটি টার্গেট স্বার্থক ভাবে সম্পন্ন করছে সেখানে সরকার ও আইনশৃংখলা রক্ষারাহীনির টার্গেট কেন বার বা ব্যর্থ হচ্ছে? তাদেরই ব্যর্থতাই দেশের প্রতিটি সাধারন মানুষকে আজ ভাবিয়ে তুলেছে । সবার মনেই আজ চাপাতি বুলেট তিনজন মোটরসাইকেল আরোহীর এক অজানা আতংক ।সবার মনেই আজ একই প্রশ্ন ধর্মের দোহায় দিয়ে বা ধর্মের নাম করে আজ যারা সাধারন মানুষের আরামের ঘুম হারম করে দিতে চাইছে তাদের কি কোন বিচার হবে না ? দেশ কি তাহলে তালেবানের আর্দশ ধারন করা জঙ্গিদের আফগান হতেই চলছে ? দেশ কি তাহলে তাহলে দুর্বৃত্তের হতেই চলে যাচ্ছে ? যানি না এ সব প্রশ্নের উত্তর কর কাছে পাবো । তার পরেও প্রত্যাশ সোনার বাংলায় আগামির সূর্য শান্তির সূর্যেই উদিত হবে ।