খবরটি প্রথম মূলধারার মিডিয়ায় এসেছে, এরপর যথারীতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে মানুষের নানা রিএকশন দেখছি আমরা। ‘শাট আপ, বাস্টার্ড। ইউ টেক ইউর সিট।’ হাইকোর্টে এক মামলার শুনানিতে এটর্নি জেনারেল এর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে এই কথা বলেন ডঃ কামাল হোসেন (বিস্তারিত পড়ুন)।
ফেইসবুকে দেখছি এতে অনেকেই আনন্দ প্রকাশ করছেন, কারণ অনেকের কাছে অপছন্দনীয় এটর্নি জেনারেল গালি খেয়েছেন। আবার কেউ কেউ দেশের সর্বোচ্চ আদালতে ডঃ কামাল এর গালি দেয়ার নিন্দায় সরব। খবরেই দেখা যায় গালি দেয়ার জন্য ডঃ কামাল এরপর এটর্নি জেনারেলের কাছে ক্ষমা চান। লক্ষণীয় বিষয়, ডঃ কামাল স্রেফ গালি দেবার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন, কিন্তু ‘বাস্টার্ড’ শব্দটিকে গালি হিসাবে ব্যবহার করার জন্য ক্ষমা চাননি। সেই প্রশ্ন কেন আসছে, সেটা নিয়ে আলোচনার আগে আসুন, গালি নিয়ে কিছু কথা বলে নেয়া যাক।

স্বাভাবিক অবস্থায় আমরা প্রায় সবাই একবাক্যে স্বীকার করবো গালি দেয়া অনুচিত, কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে আমরা প্রায় সবাই কম-বেশি গালি দেই। এজন্যই পৃথিবীর সব ভাষায় আদিকাল থেকেই গালি তৈরি হয়েছে। পুরনো গালি পাল্টে হয়তো নতুন গালি তৈরি হয়, কিন্তু গালি টিকে থাকে স্বমহিমায়। এর মানে মানুষের আবেগের এমন পর্যায়ে যায় কখনো কখনো, যখন আর সব শব্দ তার আবেগকে প্রকাশ করতে পারে না, তার গালি দিতে ইচ্ছে করে। বলা বাহুল্য গালি তাৎক্ষণিকভাবে দুইটি উদ্দেশ্য পূর্ণ করে – প্রতিপক্ষকে আঘাত করা, আর নিজের ক্রোধ শান্ত করা। দ্বিতীয়টিও গুরুত্বপূর্ণ; এটা প্রমাণ হয় যখন আমরা কাউকে তার অনুপস্থিতিতেও গালি দেই।
প্রশ্ন আসতে পারে, কোন গালি কি বেশি অনৈতিক বা কোনোটি কি কম অনৈতিক? এর একটা সামাজিক মানদণ্ড কিন্তু আছে। সহজ উদাহরণ হতে পারে, বাবা-মা তুলে গালি দেয়া। বাস্তব জীবনে খেয়াল করে দেখছি দু’জন ব্যক্তি পরস্পরের সাথে ঝগড়া করার সময় পরষ্পরকে তুমুল গালিগালাজ করছে, কিন্তু কোন পর্যায়ে একজন অপরজনকে বাবা-মা তুলে গালি দেবার সাথে সাথে হাতাহাতি-মারামারি শুরু হয়ে যায়।
কিন্তু আমরা খেয়ালও করি না আমরা যেসব গালি হরহামেশা ব্যবহার করি সেগুলোর অনেকগুলোই অযৌক্তিকই শুধু নয় অনৈতিকও। শুরুতেই আসতে পারে নানান প্রাণীর নাম করে আমরা যেসব গালি দেই – কুত্তার/শুয়োরের বাচ্চা আমাদের খুব কমন গালি। আছে গরু/ছাগল/গাধা ইত্যাদিও। আবার মাঝে মাঝে ওই পুরো প্রাণীকূলকে একত্র করে বলি পশু/জানোয়ার। এমনকি তুলনামূলক ‘ঠাণ্ডা’ পরিস্থিতিতেও আমরা কোন নির্মমতা, নৃশংসতা দেখলে সেটা যে ঘটিয়েছে তাকে ‘পশু’ বলি, নির্যাতনকে বিশেষায়িত করি ‘পাশবিক’ বলে।
আমার বিবেচনায় এই গালিগুলো দিয়ে আমরা এই পৃথিবীর অসংখ্য প্রাণীকে বাজে ভাবে অসম্মান করি। মানি, এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী হবার সম্ভাবনা ছিল মানুষের, কিন্তু আমাদের জানা ইতিহাসে মানুষের যে রূপ দেখি আমরা, তাতে মানুষকে সব প্রাণীর মধ্যে নিকৃষ্টতম বলে আমি মনে করি। মানুষের বিবেচনায় আর যে কোন প্রাণী অনেক ‘মানবিক’। প্রাণীর নাম করে এই গালিগুলো তাই আমার বিবেচনায় অনৈতিক।
যখন স্কুলে পড়তাম, তখন বছরে/দুই বছরে একবার গ্রামের বাড়ি যাওয়া হতো। কোন একবার মনে পড়ে একটা ছেলেকে দেখিয়ে গ্রামের আমার সমবয়সী একটা ছেলে আমাকে জানিয়েছিলো সে ‘জারক সন্তান’ (নোয়াখালীতে জারজ সন্তানকে ওভাবেই বলা হয়)। বলার পর তার অভিব্যক্তিতে ফুটে উঠেছিলো দারুন ঘৃণা। আমি তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম ‘জারক সন্তান’ মানে কী? সে কিছু একটা বোঝাতে চেয়েছিলো যেটা আমি সেই বয়সে বুঝতে পারিনি। ওটা বুঝতে না পারলেও ‘জারক সন্তান’ হওয়া যে ভয়ঙ্কর খারাপ ব্যাপার সেটা ওর অভিব্যক্তি থেকেই বুঝে নিয়েছিলাম।
তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই জারজ সন্তান জন্মের প্রক্রিয়ায় নারী-পুরুষদের মধ্যে একজন বা উভয়জনই অপরাধী (সব ক্ষেত্রে আমি অপরাধী বলে মনে করি না), তবুও প্রশ্ন ওঠে ওই প্রক্রিয়ায় জন্মলাভ করা মানুষটি কি অপরাধী? কীভাবে? সেই মানব সন্তানটি কি খুব খারাপ? এতোটাই খারাপ যে ওটা বলে আমরা একজন মানুষকে গালি দেই প্রচন্ড আঘাত করার উদ্দেশ্যে? শুধু কি তাই? টোনগত ধাক্কা বেশি দেবার জন্য বের করেছি এটার নানা প্রতিশব্দ – বেজন্মা, হারামজাদা। শত শত বছর ধরে এই পৃথিবীর বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে যেসব মানুষ, তারা সবাই ই ছিল ‘বৈধ’। অথচ খারাপ হয়ে গেলো সব ‘অবৈধ’ সন্তানেরা।
ডঃ কামাল যখন এটর্নি জেনারেলকে ওই গালিটি দিলেন, এটর্নি জেনারেলের জায়গায় আমি হলে এই গালি নিজের গায়ে লাগাতাম না, কিন্তু কামাল এর কাছে জানতে অবশ্যই চাইতাম ‘বাস্টার্ড’ বলে গালি দিয়ে তিনি কি একেবারেই নিরপরাধ কিছু মানব সন্তানের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের মতো অসভ্যতা করছেন না?
কথাগুলো নানাভাবে এর আগেও কেউ কেউ বলেছেন। নজরুল এর ‘বারাঙ্গনা’ কবিতার এই কয়েক পংক্তি তো খুব বিখ্যাত –
“সেরেফ্ পশুর ক্ষুধা নিয়ে হেথা মিলে নরনারী যত,
সেই কামানার সন্তান মোরা! তবুও গর্ব কত!
শুন ধর্মের চাঁই-
জারজ কামজ সন্তানে দেখি কোনো সে প্রভেদ নাই!”
কিন্তু এরপরও দেশের সর্বোচ্চ একজন আইনজীবী, সকাল-বিকাল মানবাধিকার কপচানো একজন মানুষ, ডঃ কামাল হোসেনের মতো মানুষকে এই শব্দকে গালি হিসাবে ব্যবহার করতে দেখি আমরা! গালি নিয়ে কথাগুলো তাই মাঝে মাঝেই সমাজের আলোচনায় আসুক, থাকুক।
সৈয়দ আশরাফ মহি-উদ্-দ্বীন বলেছেনঃ
`কিন্তু এরপরও দেশের সর্বোচ্চ একজন আইনজীবী, সকাল-বিকাল মানবাধিকার কপচানো একজন মানুষ, ডঃ কামাল হোসেনের মতো মানুষকে এই শব্দকে গালি হিসাবে ব্যবহার করতে দেখি আমরা!’ –
মানবাধিকারের হোলসেলার !!
আমার নানা বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি পাশ করে আসেননি, মায়ের কাছে শুনেছি উনি নাকি ভীষণ রেগে গেলে ছেলে মেয়েদের গালি দিতেন `এলাচ’ `দারচিনি’ এইসব বলে। অল্প শিক্ষিত স্কুল মাস্টার তো, তাই গালিটাও ভালো ভাবে দিতে পারতেন না !!
চমৎকার লিখেছেন জাহেদ ভাই। ভালো থাকবেন।
নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেনঃ
খুব গুছানো হয়েছে ভাইয়া লেখাটা। আসলে কি বলবো এমন শিক্ষিত শ্রেনী যদি সবোর্চচ আদালতে এমন গালি মুখে নিয়ে ঘুরে দেশটা কোন দিকে যাচ্ছে সেটা আর বলার দরকার নেই। আপনার জন্য শুভ কামনা।
সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেনঃ
জাহেদ ভাই,
বলেন তো- আজ পর্যন্ত কোন মা তার সন্তানকে খারাপ বলেছে? উত্তর হলো- বলে নাই! হিটলারের মাকেও যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, বলো তো ঠাকুমা, তোমার পোলা হিটলার কেমন ছিল? উত্তরে তিনি অবশ্যই বলবেন, “আমার হিটুর মত পোলা এই পৃথিবীতে আর একটাও পাবি না!”
উল্টা তার কাছ থেকে “দূর হ মুখ পোড়া” গালি খেয়ে ফিরে আসতে হবে!
ঠিক তেমনি, বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে মানুষকে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী’ বলেছে কে? সেটা মানুষই তো বলেছে, বাঘ-ভাল্লুক তো আর বলে নাই? এখন বলেন, কবি কি বলে গেছেন এবিষয়ে?
কবি বলে গেছেন,-
এখানে কবি ‘লোকে’ বলে মানুষকেই রেফারেন্স বা সার্টিফিকেট দাতা হিসেবে ধরে নিয়েছেন। এই সার্টিফিকেট বাঘ-ভাল্লুকের কাছ থেকে নিতে পারলে বিচারটা নিরপেক্ষ হতো বলে অন্যসব প্রাণীজগৎ মনে করে!
এই পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, একই সাথে চিন্তায়, বুদ্ধিতে, হিংস্রতায়, ভালবাসায় (?) প্রানীজগতে মানুষের কাছাকাছি যায় এমন আর একটাও প্রানী নাই! থাকলে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব বোঝা যেত।
এবার পোষ্ট রিলেটেড বিষয়ে বলি-
এই বঙ্গে একটা প্রচলিত ধারণা আছে- ব্লগার মানেই গালিবাজ। কিন্তু সুশীলরাও যে ভরা আদালতে গালি দেয় বা দিতে পারে সেটারও একটা প্রমাণ থেকে গেলো। আমাদের আপাতত এটাই লাভ।
এবার আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দেন- আচ্ছা! কেন ডঃ কামাল হোসেনের মত একজন জ্যৈষ্ঠ আইনজীবীর এটর্নি জেনারেলকে গালি দেওয়ার প্রয়োজন হলো?
আমার ধারণা, বর্তমান সরকার নিজেদের ক্ষমতাকেন্দ্রকে এমনভাবে ব্যবহার করছেন যে তা মানুষকে প্রচন্ডভাবে ক্ষিপ্ত করে ফেলেছে! আপনার কী ধারণা?
মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেনঃ
আসলে গলির এমন বিশ্লেষণ তো আগে চিন্তা করিনি। আর বিজ্ঞ এটর্নি জেনারেলকে বাহবা না দিয়ে পারছি না। এমন কঠিন গালি খাওয়ার পরেও তিনি কি নির্বিকার। একজন সিনিয়রের প্রতি একজন জুনিয়ার আইনজীবীর এই সহনশীল আচরণ অনুকরণীয়।
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
গালি নিয়ে আগে যা জানতামনা, তা আজ দাদা’র লেখা পড়ে জানা হলো । লেখা পড়ে একজন সম্মানিত ব্যক্তির নিজের ক্রোধকে শান্ত করার কথা নিয়েও ভাবছি দাদা ।
আমি হলে সম্মানিত ড. কামাল সাহেবকে এভাবেই জিজ্ঞেস করতাম, দাদা । আমার মনে হয়, উনি যখন এই কথা বা (গালি) উচ্চারণ করেছিলেন, তখন ওনার মাতায় কিছুই খেলছিলনা । তাই নিজেকে শান্ত করার জন্যই এই শব্দটি ব্যবহার করেছে ।
মনোনেশ দাস বলেছেনঃ
গালি দেয়া কি ফৌজদারি অপরাধে পড়ে ?
মজিবর রহমান বলেছেনঃ
জাহেদ ভাই, এই গালিটা এখন মানুষের মুখে মুখে এই বলে যে, এতো বড় ব্যাক্টি এই গালি কিভাবে দিলেন।
তো গতকাল এইটা নিয়ে ফার্মেসীতে আলাপরত অবস্থায় এক বয়স্ক ব্যাক্তি আলচনায় বললেন আমার বাসা আর ড.. কামালের বাসা বেইলী রোডে পাশাপাশি তো আমার আম গাছের ডাল তাঁর বাড়ির ভিতর গেছে একটা কিন্তু একটি আম পায়নি জিজ্ঞাসা করলে বলে জানিনা। (চাকর বাঁ বাড়ির কেউ না।) তো এবা সিসি ক্যামেরা কেউ একটি আম পাড়তে পারেনি। ঐ চাচার দুঃখ আম খাওয়া জিনিস খাবে কিন্তু স্বীকার করবেনা না কেণ?
অন্য প্রসন্নগ আনা অনুচিত অবুও আনলাম এই জন্য যে তাঁর বাড়ির কেউ না কেউ আম পাড়ে তাঁকে বললে সে কিভাবে এড়িয়ে যাবে।
আপনি গালির সুন্দর একটি ব্যাখা দিয়েছেন।
মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেনঃ
একজন সম্মানিত মানুষ মুখ ফসকে একটা বেফাঁস গালি দিযে ফেলেছেন। এ জন্য তাকে অনুতপ্ত হতে দেখেছি। কেবল একটি গালিতে কোন মানুষের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোঁড়া খুড়িঁ করা কি ঠিক হবে। আমি নিজেও একদিন তার বাসায় গিয়েছিলাম। তার মেয়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছি আলাপ করেছি অনেক ক্ষণ। তার মেয়ে সারাহ কামালও ভাল মানুষ। একটি গাছের ডাল থেকে আম পেড়ে খাওয়ার মতো নিচুতা ড. কামালের হবে বলে মনে করি না। বাড়ির চাকর বাকর বা আশ্রিয়তরা হয়তো সেটা করতে পারে। প্রতিবেশিদের মধ্যে এমন বিষয়ে মনোমালিন্য হতেই পারে। তাই বলে তার সব কিছুই নষ্ট হয়ে যায় না।
মঞ্জুর মোর্শেদ বলেছেনঃ
জাহেদ ,
মানুষের বাচ্চা অত্যন্ত জৌক্তিক ভাবেই একটা চমৎকার গালি হতে পারে ।এই মানুষের জন্যই আজকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং । পশুদের মধ্যে সম্পদ কুক্ষিগত করার প্রবণতা নেই । নিজের উদর্পূর্তির পর মানুষ খেতে না পারলেও সঞ্চয়ের দিকে যায় । যেটা প্রাণিকুলে দ্বিতীয়টি নেই ।
নেট জিও তে দেখেছি একটা বাঘ তার উদর্পূর্তির পরে যখন তার সামনে দিয়ে একটা সুস্বাদু হরিণ চলে যায় সে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে ।কারণ তার খিদে পেলেই সে তার শিকারি ধর্ম টাই প্রকাশ করে । সেদিক থেকে মানুষ এই মাংসাশী প্রাণীটির চাইতেও ভয়ংকর । কারণ সে পড়াশুনা করে প্রফিট মেক্সিমাইজেশনের তত্ব বের করে । মানুষের ক্ষিদে সর্ব গ্রাসী । সে এই বাসযোগ্য ভূমি টাকেও খেয়ে ফেলতে চাচ্ছে । এবং এর জন্য সে তত্ত্ব বের করে সমর্থন ও আদায় করে ।
পশুদের মধ্যে ধর্ষণ ব্যাপারটি নেই । জোর পূর্বক তারা মিলিত হয় না ।আর সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ আবার তার এই ধর্ষণ আকাঙ্খাকে এনিম্যাল ইনিস্টিনক বা পশু প্রবৃত্তি নাম দিয়ে কি দারুন করেই নিজেকে আড়াল করেছে । কুকর্ম করে নিজেকে আড়াল করতে কেবল মানুষই পারে ।
আমাদের এই ফুড চেইন বা খাদ্য শৃঙ্খলে একমাত্র মানুষই হচ্ছে সর্বভূক ।সে একইসাথে তৃণ ভোজী এবং মাংশাসিও ।সূর্য থেকে শক্তি নিয়ে উদ্ভিদ বা গাছ যেমন উৎপাদকের মহান ভূমিকায় নিয়োজিত তেমনি তাকে সংহার করে তৃণভোজী রা বাঁচে । মানুষ আবার সেই তৃণভোজী দের সংহার করলেও সমস্যা ছিল না । সে সব কিছুই আহার করে আমাদের এই ইকো সিস্টেমকেই শেষ করে দিচ্ছে । তারপরেও সে শুধু আহার হিসেবেই উদ্ভিদ বা প্রাণী সংহার করছে না , তার আরাম আয়েসের কারণে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে । তার বাহারি আরাম আয়েশ এর জন্য সে অন্যত্র বাহবাও কুড়াচ্ছে ।
বিজ্ঞানীরা প্রমান সহকারেই দেখিয়েছেন পৃথিবীতে একটা আদম সন্তান না থাকলেও পৃথিবীর কোন ক্ষতি হবে না । আর যদি কোন বৃক্ষ না থাকে তাহলে পৃথিবী র আয়ু থাকবে মাত্র আধ ঘন্টা । কারণ যে পরিমান কার্বন নির্গমন হবে সেটা যদি বৃক্ষ দিয়ে শোষিত না হয় তাহলে তাপমাত্রা বেড়ে পুরো পৃথিবী অর্ধ ঘন্টায় শেষ হয়ে যেতে পারে ।এ তথ্যটি বিবিসির ডেটলাইন লন্ডন ( সানডে টক শো ) এ পেয়েছিলাম ।
আমি জানি বিপক্ষেও যুক্তি আছে । এই পুঁজিবাদী বিশ্বে সম্পদ কুক্ষিগত করার ভয়ংকর প্রবণতার দরুন আজকে মাত্র পঞ্চান্ন জন বিলিওনিয়ার পৃথিবীর ৯৫% সম্পত্তির মালিক । আর এটা সম্ভব করেছে সৃষ্টির সেরা জীব মানুষই ।
সুকান্ত বলেছিলেন হে মহাজীবন, আর এ কাব্য নয় । এবার কঠিন কঠোর গদ্যে আনো । আমি বলব হে ব্লগার লিখায় রাজনীতি ফিরিয়ে আনো ।
গোলাম রসুল খান (মুহতাসিম) বলেছেনঃ
যারা গালিবাজ তারা যত বড়ই হন না কেন ঠিক সময়ে তাদের চরিত্র প্রকাশ হয়। ড. কামাল যিনি কিনা এদেশের সংবিধানটা প্রণয়নে অত্যন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি এরকম একটা পরিবেশে এরকম গালির মাধ্যমে আদতে প্রকাশ করলেন যত বড় কর্মবীর ই হোন না কেন দিনশেষে একজন অশ্লীল লোক তিনি। এ ঘটনার পর চারদিকে তেমন কোন আওয়াজ হয়নি। কারণটা আমি আপনি সবাই বুঝি বটে।
আব্দুস সামাদ আজাদ বলেছেনঃ
গালি কার মুখ দিয়ে আসছে, দেশ কাল প্রেক্ষাপটে তা নিয়ে ভাবতেই হবে। শুধু অসভ্যতার অসিলা ধরে এমন একটি বিষয়কে এড়িয়ে যাওয়া মোটেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ হবে না। রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেলকে গালি খেতে হয় দেশটা কোন পর্যায়ে আসলে তাও ভেবে দেখতে হবে। একচোখা চশমা পরে একপেশে যুক্তি দিয়ে কোনো লাভ নেই।
এদেশের সরকারি সব পর্যায়ের কর্মকর্তারা (যারা পাট চাটা গোলাম-তাই সে সরকারই হোক) গালি খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। এ বিষয়টি খুব সূক্ষ্মভাবে ভেবে্ দেখুন। জবাব পেয়ে যাবেন, কিন্তু কিছুই খোলামেলা বলতে পারবে না জনান জাহেদ-উর-রহমান।
জাহেদ-উর-রহমান বলেছেনঃ
মন্তব্যের জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। প্রচন্ড ধকলের মধ্য দিয়ে গেল আজকের সারাটা দিন। সকাল থেকে ব্যস্ত ছিলাম হার্ট এটাক হওয়া মামাকে নিয়ে। আর সন্ধ্যা হতেই মাথায় বাজ পড়লো উৎপল দা’র চলে যাবার খবরে। গেলাম ওই হাসপাতালে। এখন শরীরে রাজ্যের ক্লান্তি।
সবার মন্তব্য পড়েছি, মন্তব্যগুলোতে কিছু যুক্ত করতে চাই, আবার কিছু কথার জবাব দিতে চাই। সময় করে করবো সেটা।
তানজির খান বলেছেনঃ
খুব গুছিয়ে দারুণ বিশ্লেষণ করে লেখাটি তুলে ধরেছেন। লেখার মানবিক দিকটা স্পষ্ট। ধন্যবাদ আপনাকে
নাভিদ ইবনে সাজিদ নির্জন বলেছেনঃ
দারুন লিখেছেন ব্লগারঃ জাহেদ-উর-রহমান। আপনাকে ধন্যবাদ।