পানখোর ও ধূমপায়ীদের জন্য বাধ্যতামূলক ‘TIN’ নম্বর চাই

জাকির হোসেইন
Published : 22 March 2016, 11:45 PM
Updated : 22 March 2016, 11:45 PM

খাদ্য-শৃঙ্খলের বাইরে মানুষ যা খায়, তাকে কী বলা যায়! মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যা খায় তাই খাদ্য। খাদ্য তালিকার বাইরে মানুষ চা, পান-সুপারী, জর্দ্দা, সাদা বা তামাক পাতা, চুন, বিড়ি-সিগারেট, চুরুট, গুল ইত্যাদি খায়। এ গুলো কেন খায়? খাদ্য না হয়েও এসব উপাদান মানুষের খাদ্য তালিকার বিরাট অংশ জুড়ে আছে। এ গুলোকে অনুমোদিত নেশাদ্রব্য বলা যায়। এ ছাড়াও আছে নিষিদ্ধ দ্রব্য, যেমন- ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঞ্জা, মদ, চরস, ভাং, আফিম, সীসা ইত্যাদি। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ অনুমোদিত নেশাদ্রব্যের মধ্যে হয় পান-সুপারি-জর্দ্দা না হয় বিড়ি-সিগারেট অথবা উভয়ই গ্রহণ করে থাকে।

পান-সুপারি, বিড়ি-সিগারেট- এগুলোর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা এই পোস্টের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। একজন মানুষের নেশাদ্রব্য বা কুখাদ্য খেয়ে তার পরিশ্রমের অর্থ নষ্ট করার স্বাধীনতা আছে। ব্যক্তি-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার রাষ্ট্রের নেই। কিন্তু ব্যক্তিকে সংযত করার ক্ষমতা রাষ্ট্র সংরক্ষণ করে। অনুমোদিত নেশা দ্রব্য কেবল ব্যক্তির অর্থই অপচয় করে না, তার স্বাস্থ্যহানিরও প্রধান কারণ। বিড়ি-সিগারেট আরো একধাপ এগিয়ে পরিবেশ দূষণ ঘটায়।

একজন পানখোর দিনে নূন্যতম দশটি পান খেলে বছরে তার খরচ হয় (৫*১০*৩৬৫) বা ১৮২৫০ টাকা। কোন কোন পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দু'জনেই পান খায়। সে ক্ষেত্রে বছরে খরচ দাঁড়ায় ৩৬৫০০ টাকা। ঘরোয়া বা পারিবারিক অনুষ্ঠান, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এগুলোর ব্যবহার বেড়ে যায়। একজন মানুষ যদি তার এই অনর্থক অপচয়ের টাকা পাঁচ বছর ব্যাংকে জমা রাখেন তাহলে পাবেন ৯১২৫০ টাকা। তাহলে ভেবে দেখুন, সারা জীবনে একজন মানুষ কী পরিমান অর্থ অপচয় করেন।

অনুরূপভাবে, একজন ধূমপায়ী সমপরিমাণ অথবা এর বেশি অর্থ অপচয় করেন। এ উভয় পক্ষ আবার চা-পানকারীও। সার্বিক বিবেচনায়, ধূমপায়ী ও পানখোররা পারিবারিক আয়ের একটা বড় অংশ অপচয় করেন। অথচ এ টাকাগুলো জমা রাখলে বা সঞ্চয় করলে ভবিষ্যতের বন্ধু হতে পারে।

অনর্থক অর্থ অপচয়কারীদের সংযত করতে আমি রাষ্ট্রে কাছে একটি প্রস্তাব রাখতে চাই। এতে আর কিছু না হোক রাষ্ট্র উপকৃত হবে। সেটি হল- প্রত্যেক পানখোর ও ধূমপায়ীর বাধ্যতামূলক টিন (TIN) থাকা। এই টিনের বিপরীতে এরা প্রথম অর্থ বছরে দুই হাজার টাকা, পরের অর্থ বছরে দুই হাজার পঞ্চাশ টাকা, এভাবে প্রত্যেক অর্থ বছরে পঞ্চাশ টাকা বেশি ধরে আয়কর প্রদান করবেন। এই জনগোষ্ঠী যেন আয়কর অফিসে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হন। বরং তাদের যেন চা, পান- সিগারেট দ্বারা আপ্যায়ন করা হয়। এ জন্য প্রয়োজনীয় আইন তৈরি করা হোক। আর প্রতি বছর যেন তামাক জাত দ্রব্যের ওপর ট্যাক্স ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়।