ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিয়ে ’ভ্যাট-ট্যাক্স’ নিন

জাকির হোসেইন
Published : 5 June 2016, 08:32 PM
Updated : 5 June 2016, 08:32 PM

ভ্যাট সরকারের আয়ের একটি উৎস। শক্তিশালী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য ভ্যাট আহরণ অতীব জরুরি। সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবি ছাড়া ব্যবসায়ীরাই বড় স্কেলের ভ্যাট প্রদানকারী। অথবা সরকার আশা করে সিংহভাগ ব্যবসায়ী ভ্যাট প্রদান করুক। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী ভ্যাটপ্রদানকারীদের যে পরিসংখ্যান উল্লেখ করেছেন তা অতি নগন্য। ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায়ে সরকার যে ভাবে সফল হতে পারে আমি তার উল্লেখযোগ্য দিক গুলো তুলে ধরছি।
১) সর্ব প্রথম ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করা। ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হন বাড়ীর মালিক বা দোকান মালিক দ্বারা। একজন ব্যবসায়ী তিলে তিলে পরিশ্রম করে যখন তার ব্যবসা দাঁড় করান, একটা শক্ত ভিত তৈরি করেন তখন বাড়ীওয়ালা হয় অ্যাডভান্স( অগ্রিম জামানত) দ্বিগুণ করবেন, না হয় ভাড়া অস্বাভাবিক বাড়াবেন। কোন কোন ক্ষেত্রে দুটোই ঘটে থাকে। একজন বাড়ীওয়ালা দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নিয়ে থাকেন– ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে। কোন আইনের বলে তারা এটা করেন বা এ ব্যাপারে সরকারের কোন দিক নির্দেশনা আছে কিনা তা ব্যবসায়ীদের জানানো। সরকারের উচিত স্থানভেদে বাড়ীওয়ালারা তিন থেকে ছয় মাসের ভাড়া অগ্রিম নিতে পারবেন – এমন নির্দেশনা জারী করা।

২) স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসনের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট এলাকার সকল ব্যবসায়ীদের দাওয়াত দিয়ে কোন কমিউনিটি সেন্টার বা বিদ্যালয়ে জড়ো করে মোটিভেশন করা। কর অফিসের লোকজন সেখানে উপস্থিত থেকে ব্যবসায়ীদের বুঝাবেন কেন তাদের কর দিতে হবে, কারা ভ্যাটের আওতায় থাকবেন, ভ্যাট ট্যাক্স দিলে সরকার থেকে বাড়তি কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায় কিনা ইত্যাদি। ঐদিন উপস্থিত সবাইকে আপ্যায়ন করা। এবং বছরে একবার অন্তত এ ধরনের আয়োজন থাকতে পারে।

৩) ইদানিং কোন ব্যাংকই জমাজমির মর্টগেজ ব্যতীত ঋণ দিতে চান না। এমনকি এসএমই-র ক্ষেত্রেও। উপযুক্ত দু'জন জিম্মাদারের জিম্মায় দশ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংকঋণের সুবিধা সরকারকে করতে হবে। যেদিন ব্যবসায়ী সম্মেলন হবে সেদিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও উপস্থিত রাখা যেতে পারে। কোন ব্যবসায়ীর ঋণ প্রয়োজন হলে, তিনি যদি পাঁচ লাখ টাকা পাওয়ার যোগ্য হন তবে তার স্পট টিইএন ও নূন্যতম ট্যাক্স ব্যাংক ঋণ থেকে সমন্ময় করা।

৪) আয়কর বিবরণী আগামী এক বছরের মধ্যে অন লাইন করা। স্বল্প শিক্ষিত একজন ব্যক্তি যেন কর অফিসে না গিয়ে তার স্মার্ট ফোন বা এক জন কম্পিউটার অপরেটরের মাধ্যমে আয় কর বিবরণী জমাদান করতে পারেন। বিকাশ, মোবাইল ব্যাংকিং বা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা জমা দানের অপশন রাখা।

৫) যে সব ব্যবসায়ী টানা পাঁচ, দশ, পনের বছর ট্যাক্স দিবে তাদের পুরষ্কৃত করা। এতে অন্যরা উদ্বুদ্ধ হবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের জন্য বড় বাজেট প্রয়োজন। আর বাজেটের প্রাণ হচ্ছে ভ্যাট ও ট্যাক্স। কারন এটি সম্পূর্ণ নিজস্ব আয়। মাননীয় অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, ট্যাক্স অফিসের এসি কিছুদিন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিন। তাদের ব্যবসায়ীদের কাছে পাঠান। অবশ্যই ফল পাবেন। সর্বোপরি, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখুন।।