ধৈর্য্যকে বন্ধু করে থাকতে পারলেন না তো

নাজমুল হক জেনিথ.
Published : 1 July 2012, 05:03 AM
Updated : 1 July 2012, 05:03 AM

১০ মে । রাত ২টার সময় ফেসবুকের 'স্টাটাস মাঝে মাঝে সময়টা খুব খারাপ যায়, তখন ধৈর্যই সবচেয়ে বড় বন্ধু'। এ বন্ধু কে ধারন না করে অভিমানে চলে গেলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ব্যাচের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী শাহলিনা পারভিন তনা। ফেসবুকের সর্বশেষ স্টাটাস দেবার ৪৮দিন পরে পরিবারের উপর অভিমান করে চলে গেলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় পাশ্ববর্তী এলাকায় ভাড়া করা বাসায় গলায় ফাস দিয়ে আত্ম হত্যার পথ বেছে নেয়। পরিবারের অমতে জাকারিয়া আহমেদ মিহির নামে এক সহপাঠিকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। এজন্য বাবা মার সাথে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল । এর জের ধরেই আত্মহত্যা করেছে তনা অভিযোগ বন্ধুদের। গত ডিসেম্বরে মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল ছেড়ে পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকায় ১২৫নং বাসা ভাড়া নেন তনাসহ কয়েকজন বান্ধবী। একই বাসায় আলাদা আলাদা রুমে থাকতেন তারা। তনার বান্ধবী ঝর্ণা আক্তার জানান, আমরা মঙ্গলবার রাতে বটতলা থেকে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে যে যার ঘরে চলে যাই। পরে বুধবার সকাল ৬টায় তনার কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখি ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ ঝুলছে। বিগত কয়েক বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্খী আত্মহত্যা করেন। তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে যেটি দেখা যায় প্রেমঘটিত বা দাম্পত্য কলহ । এর মধ্যে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে প্রেম ঘটিত কারনে আত্মহত্যা করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্র সানোয়ার হোসেন। ২০০৮ সালে প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান করে প্রীতিলতা হলে আত্মহত্যা করেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্রী ফারজানা সোমা। সেশন জটে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টাসের ছাত্র সোহান-উর-রহমান ২০১০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ২০১০ সালের১ ২ এপ্রিল অর্থনীতি বিভাগের দ্বির্তীয় বর্ষেল ছাত্রী ফারহানা রুহী আত্ম হত্যা করেন। এক শিক্ষক কে ভালবেসে বিয়ে করাবর স্বপ্ন ছিলো মার্জিয়া জান্নাত সুমির। কিন্তু ঐ শিক্ষকের উপর আস্থা না রাখতে পেরে গত বছরের ১০আগস্ট আত্মহত্যা করেন সুমি। সর্বশেষ শাহলিনা পরাভিন তনা গত ২৮ জুলাই আত্মগতার পথ বেছে নেন ।

এ অকাল প্রস্থান রোধের কি কোনই রাস্তা নেই। সাধারন শিক্ষার্থীরা মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যে ছাত্র কল্যান ও পরামশদান কেন্দ্র রয়েছে সেগুলো কাউন্সিলিং শাখা কে যদি শক্তিশালী করা যায় তাহলে কিছুটা হলেও এর রোধ সম্ভব। তাদের দাবি এভাবে আর কাউকে যেন চলে যেতে না হয় ধৈয্যর সাথে না থাকতে পেরে।